প্রতিবেদক: Nayan Dewanji | ক্যাটেগরি: জাতীয় | প্রকাশ: 11 Jun 2025, 10:20 PM
সন্ধ্যার আলোর নিচে জাতীয় স্টেডিয়ামের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল এক পতাকা বিক্রেতা—গলায় বাঁধা লাল-সবুজ, হাতে নিড়ানি করা কাপড়ের গুচ্ছ। বাংলাদেশের খেলা মানেই তো তার রোজগারের দিন। এদিনও তাই সে এসেছিল, বুক ভরা আশা আর কিছুটা অগোছালো স্বপ্ন নিয়ে।
তবে ১০ জুনের সেই মঙ্গলবার সন্ধ্যাটা ছিল ব্যতিক্রমী। সেদিন ছিল বাংলাদেশ বনাম সিঙ্গাপুরের এএফসি এশিয়ান কাপের কোয়ালিফায়ার ম্যাচ। স্টেডিয়ামের চারদিকজুড়ে ছিল মানুষ, উত্তেজনা আর উন্মাদনার ঢেউ। ৪ নম্বর গেটের সামনে হঠাৎ করেই ছড়িয়ে পড়ে বিশৃঙ্খলা—বিনা টিকিটে প্রবেশের চেষ্টায় কয়েকশ’ দর্শকের চাপ সামলাতে ব্যস্ত হয়ে ওঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
চাপের মুখে একসময় ছত্রভঙ্গ করতে হয় জমায়েত। আর সেই সময়েই ঘটে যায় এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। মানুষের ভিড়, হুড়োহুড়ি আর লাঠির ঢেউয়ে সেই নিরীহ পতাকা বিক্রেতার পিঠে পড়ে এক আঘাত—একজন সেনাসদস্যের ভুলবশত লাঠিচার্জের ফসল।
এই ছোট্ট, অথচ স্পর্শকাতর ঘটনায় কেঁপে ওঠে সামাজিক চেতনা। তবে যা বিস্ময়ের, তা হলো—ঘটনার দায় স্বীকার করে নেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঘটনাটি ছিল “বিচ্ছিন্ন” এবং “অনিচ্ছাকৃত”—আবেগঘন মুহূর্তে ভুল করে যা ঘটে গেছে। কিন্তু ভুলের গ্লানি নিয়ে বসে না থেকে তারা খুঁজে বের করেন সেই পতাকা বিক্রেতাকে।
১১ জুন, গুলিস্তান আর্মি ক্যাম্পে পতাকা বিক্রেতার হাতে তুলে দেওয়া হয় এক লাখ টাকার অনুদান—সীমিত রোজগারের মানুষের জন্য তা যেন ক্ষতিপূরণ নয়, বরং সম্মান-রক্ষার একটি প্রতীক, একটি রাষ্ট্রীয় সংবেদনশীলতার বহিঃপ্রকাশ। একইসঙ্গে তাকে জানানো হয় আন্তরিক দুঃখ ও সহানুভূতি।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আফজালুর রহমান চৌধুরীর কণ্ঠে ঝরে পড়ে প্রতিষ্ঠানটির মানবিক বার্তা: “আমরা সাধারণ মানুষের ক্ষতি চাই না। আমরা দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত, কিন্তু মানুষের পাশে দাঁড়ানোও আমাদের দায়িত্ব।”
এই ঘটনায় যেমন আছে বিশৃঙ্খলার দৃষ্টান্ত, তেমনি আছে একটি সংবেদনশীল রাষ্ট্রীয় প্রতিক্রিয়ার পাঠ। এটা কেবল এক লাঠিচার্জ নয়, বরং তা থেকে জন্ম নেয় দায়িত্ববোধের আরেক পাঠ; যেখানে কর্তৃত্বশীলতার আড়ালেও থাকে ক্ষমাপ্রার্থী মন, সহমর্মিতার হাত।
শহরের গলিতে এখনো হয়তো ঘুরছেন সেই পতাকা বিক্রেতা—লাল-সবুজ নিয়ে, কিছুটা ব্যথিত পিঠে, তবে মাথা উঁচু করে। কারণ, রাষ্ট্র তার ভুলের দায় স্বীকার করেছে। আর এটাই আমাদের আশাবাদের সবচেয়ে উজ্জ্বল রঙ।
এই সংবাদটি শেয়ার করুন
বজ্রকণ্ঠে বাজে ডাকে, কালো মেঘের তীর,বৃষ্টির ফোঁটা মাটির বুকে জাগায় প্রেম-নদীর।কদমফুলের গন্ধ মেশে শিশ...
জেলা পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোয় এসেছে বড় ধরনের পরিবর্তন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নয়টি থানার মধ্যে পাঁচ থানার অ...
নিরব শিক্ষা অঙ্গন হঠাৎই অশান্ত। প্রিয় শিক্ষককে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করার প্রতিবাদে কুমিল্লা মডার্ন হা...
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেবার অব্যবস্থাপনা ও পরিচালক ডা. মাসুদ পারভেজের বিরুদ্ধে দুর্নীতির...
দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষা ও আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৪ জন প্রধান শিক্ষক ফিরে পে...
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধনের (১৮তম) চূড়ান্ত ফলাফলে কারিগরি ত্রুটির সংশোধন করে নতুন করে ৬০ হাজার ৬৩৪ জন...
The Weekly Swadesh Journal স্বদেশ জার্নাল