প্রতিবেদক: Nayan Dewanji | ক্যাটেগরি: জাতীয় | প্রকাশ: 11 Jun 2025, 11:49 AM
বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে আসন্ন এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে। আগামী শুক্রবার (১৩ জুন) লন্ডনে মুখোমুখি হবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এই আলোচিত বৈঠকটি নিয়ে ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে বলছেন, এই সাক্ষাৎ হতে পারে চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে ওঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়, যা দীর্ঘদিন ধরে উত্তপ্ত থাকা রাজনৈতিক মাঠে শীতল হাওয়া বইয়ে দিতে পারে।
মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, “প্রধান উপদেষ্টা আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বৈঠকের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে লন্ডনে, সেই হোটেলেই যেখানে প্রধান উপদেষ্টা অবস্থান করছেন। স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে ১১টার মধ্যে এই বৈঠক নির্ধারিত আছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই বৈঠক বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে উঠতে পারে। আমরা প্রত্যাশা করি, দেশের বর্তমান সংকট উত্তরণের একটি ইতিবাচক পথ রচিত হতে পারে এই আলোচনার মাধ্যমে। এটি নিঃসন্দেহে একটি বড় রাজনৈতিক ঘটনা—একটি মেজর পলিটিক্যাল ইভেন্ট।”
বিএনপি মহাসচিবের ভাষায়, “রাজনৈতিক সংকটের এই সময়টায় আলোচনার টেবিলেই সমাধান খোঁজার যে প্রয়োজন, তা এখন আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, সংঘাত নয়, আলোচনার মাধ্যমেই পথ খুঁজতে হবে। এই বৈঠক সেই ধারাবাহিকতায় একটি সাহসী ও সময়োচিত উদ্যোগ।”
তিনি জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফর ও সেখানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে সম্ভাব্য সাক্ষাৎ নিয়ে আলোচনা চলছিল। অবশেষে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণের মাধ্যমে সেটি বাস্তব রূপ নিচ্ছে। দলের স্থায়ী কমিটির সর্বশেষ বৈঠকে এই সাক্ষাৎকে স্বাগত জানানো হয়েছে।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বৈঠক কেবল প্রতীকী নয়, বাস্তব রাজনৈতিক সমঝোতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হতে পারে। এতে আলোচনায় উঠে আসতে পারে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের রূপরেখা, নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা, সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার পরিবেশ, ও নির্বাচনের সময়সীমা ইত্যাদি মৌলিক বিষয়।
প্রসঙ্গত, ড. ইউনূস গত সপ্তাহে জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে আগামী বছরের এপ্রিল মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচির ইঙ্গিত দেন। তবে বিএনপি তা প্রত্যাখ্যান করে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। ফলে এই বৈঠকের ফলাফল নির্ধারণ করতে পারে নির্বাচন নিয়ে আগামী দিনের কৌশল ও রাজনৈতিক সমীকরণ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, “আলোচনার জন্য দরজা খোলা রাখা এবং মুখোমুখি হওয়ার এই প্রবণতা দেশে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে পারে। পক্ষগুলোর মাঝে আস্থার সেতুবন্ধ তৈরি হলে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার প্রয়োজন কমে আসে।”
সবমিলিয়ে, তারেক রহমান ও ড. ইউনূসের এই বৈঠককে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে যেমন ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে, তেমনি সাধারণ মানুষের মাঝেও জেগেছে আশাবাদ। দেশবাসী চায় একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন—আর এই বৈঠক হয়তো সেই প্রত্যাশার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
১৩ জুনের এ বৈঠক যে কেবল কূটনৈতিক সৌজন্য বিনিময়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, তা বুঝিয়ে দিচ্ছে দলগুলোর প্রস্তুতি ও গুরুত্বারোপ। এখন দেখার বিষয়—এই বৈঠক কতটা ফলপ্রসূ হয় এবং তা বাংলাদেশের রাজনীতিকে কোন দিকে পরিচালিত করে।
এই সংবাদটি শেয়ার করুন
বজ্রকণ্ঠে বাজে ডাকে, কালো মেঘের তীর,বৃষ্টির ফোঁটা মাটির বুকে জাগায় প্রেম-নদীর।কদমফুলের গন্ধ মেশে শিশ...
জেলা পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোয় এসেছে বড় ধরনের পরিবর্তন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নয়টি থানার মধ্যে পাঁচ থানার অ...
নিরব শিক্ষা অঙ্গন হঠাৎই অশান্ত। প্রিয় শিক্ষককে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করার প্রতিবাদে কুমিল্লা মডার্ন হা...
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেবার অব্যবস্থাপনা ও পরিচালক ডা. মাসুদ পারভেজের বিরুদ্ধে দুর্নীতির...
দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষা ও আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৪ জন প্রধান শিক্ষক ফিরে পে...
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধনের (১৮তম) চূড়ান্ত ফলাফলে কারিগরি ত্রুটির সংশোধন করে নতুন করে ৬০ হাজার ৬৩৪ জন...
The Weekly Swadesh Journal স্বদেশ জার্নাল